নুরুস সুন্নাহ রজভীয়া ফাউন্ডেশন পরিচিতি ও পরিকল্পনা

নুরুস সুন্নাহ রজভীয়া ফাউন্ডেশন (একটি অরাজনৈতিক ও অলাভজনক ধর্মীয় সেবামূলক সংগঠন) এই সংগঠন ৭ জুন- ২০১৪ ইংরেজি সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে৷ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত বহু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তথা মাসজিদ, মাদরাসা, হিফযখানা, এতিমখানা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করে আসছে। এছাড়াও বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনাসহ দূর্যোগকালীন সময়ে এই ফাউন্ডেশন গরিব-অসহায়দের মধ্যে ত্রানসামগ্রী ও আর্থিক অনুদান নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে।


বর্তমানে এই ফাউন্ডেশন ২টি মাসজিদ, ২টি নুরানী মাদরাসা, ২টি হিফযখানা, ২টি এতিমখানা, ২টি দাখিল মাদরাসা, ১টি ইবাদাতখানা, ১টি ইসলামি সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনা করে আসছে। যার মাসিক ব্যয় ৭,০০,০০০/- (সাত লক্ষ টাকা) প্রায়।


আপাতত ফাউন্ডেশনের স্থায়ী কোনো ফান্ড না থাকায় এবং সরকারি-বেসরকারি কোনো প্রকার অনুদান না পাওয়ায় ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত প্রতিষ্ঠানসমূহের এই ব্যয় বহন করা একটি দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমতাবস্থায় আমাদের যাবতীয় তথ্য যাচাই-বাছাই পূর্বক সাধ্যনুযায়ী আপনার এককালীন বা বার্ষিক অথবা মাসিক অনুদান কামনা করছি।


আমাদের প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত প্রতিষ্ঠানসমূহের বিবরণ:

(১) হযরত জঙলীপীর ইসলামিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসা কমপ্লেক্স, পূর্ব রাজারকুল, দরগাহপাড়া, রামু, কক্সবাজার।

(ক) ইমাম আযম আবু হানিফা (রহ.) জামে মাসজিদ
এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জামে মাসজিদ। এই মাসজিদটি নিজস্ব জমিতে হযরত জঙলীপীর ইসলামিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসা’র পাশেই অবস্থিত। মাসজিদটি উক্ত কমপ্লেক্স আওতাধীন একটি প্রতিষ্ঠান। মাসজিদে মাদরাসার শিক্ষার্থীগণ ছাড়াও এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা এবং পথচারীরাও নামাজ পড়েন। কিন্তু মাসজিদটিতে মুসল্লিদের জায়গা সংকুলান না হওয়ায় প্রায় প্রতিদিন নানারকম ঝামেলার তৈরি হয়।

(খ) হযরত জঙলীপীর ইসলামিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসা (এটি একটি সরকারি কারিকুলামে পরিচালিত দাখিল মাদরাসা)৷
(গ) হযরত জঙলীপীর ইসলামিয়া সুন্নিয়া হিফযখানা।
(ঘ) হযরত জঙলীপীর ইসলামিয়া নুরুল হক এতিমখানা।
(ঙ) হযরত জঙলীপীর ইসলামিয়া সুন্নিয়া নুরানি একাডেমি।
(চ) হযরত জঙলীপীর (রহ.) ইবাদাতখানা।

(২) গাউসুল আযম জিলানি কমপ্লেক্স

(ক) হযরত ইমাম হাসান-হোসাইন (রা.) জামে মাসজিদ
(খ) রজভীয়া রায়হানিয়া মুফিজিয়া সুন্নিয়া মাদরাসা

(৩) নুরুস সুন্নাহ রজভীয়া দরসে নিযামী মাদরাসা

(৪) নুরুস সুন্নাহ রজভীয়া হিফযখানা ও এতিমখানা

(৫) নওবাহার একাডেমি



আমাদের পরিকল্পনাসমূহ:

আমাদের দেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ। সংগত কারণে এদেশে ইসলামের চর্চা কমে আসছে দিন দিন। এছাড়াও দ্বীনের সঠিক পরিবেশ না পেয়ে নিত্য নতুন নানাবিধ ফিতনা-ফ্যাসাদের দিকে ঝুকছে প্রজন্ম। মাত্র-১,৪৯,২১০ বর্গ কিলোমিটারের একটি দেশ হলেও প্রায় বিশ কোটি মানুষের বসবাস। দেশের পরিধির চেয়ে জনসংখ্যা অধিক হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে বেকারত্বের হার। সর্বপরি, দ্বীনের চর্চা বাড়ানোর পাশাপাশি এ দেশে বেকারত্বের হার কমাতে এবং গরিব-দুস্থ মানুষের আর্থিক সংকট নিরসনে ’নুরুস সুন্নাহ রজভীয়া ফাউন্ডেশন’ বহুমুখী প্রকল্প গ্রহণ করেছে। আল্লাহ চাহেতু এই প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন হলে সমগ্র দেশজুড়ে তার একটি নৈতিক প্রভাব বিস্তার ঘটবে। প্রজন্ম ঘৃণ্যতম সব ফিতনা-ফেসাদ থেকে রক্ষা পাবে, ইনশা আল্লাহ!


নুরুস সুন্নাহ রজভীয়া ফাউন্ডেশন-এর ভবিষ্যত পরিকল্পনাসমূহ: (ইনশা আল্লাহ!)

পরিকল্পনা নং-০১

শহর বা উপশহরে যাতায়াত সুবিধা সম্বলিত একটি এলাকায় কমপক্ষে দুই বিঘা নিজস্ব জমির উপর নির্মিত হবে নুরুস সুন্নাহ রজভীয়া ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়।

পরিকল্পনা নং-০২

ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়ের সাথে থাকবে ’নুরুস সুন্নাহ রজভীয়া ইনস্টিটিউট’। ইনস্টিটিউট-এর কার্যাক্রম বা ভবন বিন্যাস অনেকটা এভাবে হতে পারে। যেমন-

(ক) মডেল মাসজিদের আদলে একটি চমৎকার মাসজিদ থাকবে ’নুরুস সুন্নাহ রজভীয়া জামে মাসজিদ’। এক সাথে কমপক্ষে দশ হাজার মুসল্লি নামায আদায়ের দারুণ ব্যবস্থাপনা সম্বলিত এই মাসজিদ হবে মাসজিদে নববীর প্রাচীনতম পরিবেশে ঘেরা। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ও জুম’আ আদায়ের পাশাপাশি মাসজিদটিতে প্রতিনিয়ত কুরআন শিক্ষার আসর, হাদিসে রাসুলের পাঠদান, উন্মুক্ত মাসআলা-মাসায়িল শিক্ষার মানসম্মত ব্যবস্থাপনাসহ ইসলামি সাহিত্য-সংস্কৃতির উন্মুক্ত চর্চা কেন্দ্র।

(খ) একটি সর্বাধুনিক হিফয ও কারীয়ানা ভবন। এই ভবনে সর্বোচ্চ এক হাজার শিক্ষার্থী ও তাদের শিক্ষক এক সাথে অবস্থান করার উপযোগী পরিবেশ থাকবে। ভবনটিতে প্রয়োজনীয় সব কিছু ফাউন্ডেশন সরবরাহ করবে। কমপক্ষে ৬ তলা বিশিষ্ট হবে এই ভবনটি। হিফয এবং কারীয়ানা বিভাগের সকল কার্যক্রম এই ভবন থেকে পরিচালিত হবে।
এই বিভাগ থেকে প্রতি বছর দুই শতো দক্ষ হাফিয ও প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ক্বারী হয়ে বিশ্বব্যাপী কুরআনের আলো ছড়িয়ে দিবে ৷ ইনশা আল্লাহ!

(গ) একটি দরসে নিযামী বা মাদরাসা ভবন থাকবে। ভবনটিতে চার থেকে পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী এক সাথে পড়াশুনার সুসজ্জিত পরিবেশ থাকবে। প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীকে আধুনিক ও সুদক্ষ আলিম তৈরির যাবতীয় ব্যবস্থাপনা রাখবেন ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ।

(ঘ) বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ ও প্রশাসনিক ভবন থাকবে একটি। এই ভবনের এক থেকে তিন তলা পর্যন্ত পরিচালিত হবে ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবে। চার থেকে ছয় তলা পর্যন্ত বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের জন্য নির্ধারিত থাকবে। আমাদের প্রশিক্ষণসমূহের ধরণ অনেকটা এমন হতে পারে। যেমন-
(১) খতিব-ইমাম ও মুয়াজ্জিন প্রশিক্ষণ
(২) শিক্ষক ও আধুনিক দাঈ প্রশিক্ষণ
(৩) আইসিটি প্রশিক্ষণ
(৪) সেলাই প্রশিক্ষণ
(৫) আর্ট ও ক্যালোগ্রাফী প্রশিক্ষণ
(৬) ড্রাইভিং ও নিয়ম-নীতি বিষয়ক প্রশিক্ষণ
(৭) প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রশিক্ষণ।
উল্লেখ্য যে, আমাদের প্রত্যেক শিক্ষার্থী হাফিযে কুরআন ও আলিমে দ্বীন হওয়ার পাশাপাশি যে কোন একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ থেকে কোর্স সম্পন্ন করবেন।
পরিকল্পনা নং-০১-০২ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সম্ভাব্য খরচ হতে পারে- ৩০০,০০০০০/- (তিন শতো কোটি) টাকা।


পরিকল্পনা-০৩

দেশের প্রত্যেত্ত অঞ্চলে প্রয়োজনীয়তা যাচাই-বাছাইপূর্বক কমপক্ষে ২০টি পৃথক এতিমখনা নির্মান করা।
পরিকল্পনা নং-০৩ এর সংক্ষিপ্ত বিবরণী: প্রত্যেকটি এতিমখানা নির্মিত হবে স্থানীয় শহর বা উপশহরে৷ এই এতিমখানাসমূহে পথ শিশু এবং পিতৃহীন অনাথ ও অসহায় শিশু-কিশোরগণ স্থান পাবেন। তাদের পড়া-লেখাসহ প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থপনা ফাউন্ডেশন বহন করবে।
প্রত্যেক এতিমখানার প্রতিটি শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে নীতি-নৈতিকতাপূর্ণ জ্ঞানে জ্ঞানী হবে। একেকজন কর্মবীর ও দেশের যোগ্যতম নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবেন। ইনশা আল্লাহ!
২০টি হিফযখানার যাবতীয় কার্যক্রম ও জমিক্রয়সহ বিল্ডিং নির্মান করতে খরচ হতে পারে আনুমানিক-১০০,০০০০০০০/- (একশতো কোটি) টাকা।

পরিকল্পনা-০৪:

প্রতি বছর একটি স্বাবলম্বী প্রকল্প গ্রহণ করা যেতে পারে। আর এই প্রকল্পটি পরিচালিত হবে রমজান (মাস) থেকে রমজান। মূলত: এই প্রকল্পের মাধ্যমে গরিব-অসহায় মানুষদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গৃহহীন মানুষদের গৃহ নির্মানসহ কর্ম সংস্থান সৃষ্টি করার ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
পরিকল্পনা-০৪ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রতি বছর আনুমানিক (১০,০০০০০০০) (দশ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে। অবস্থার প্রেক্ষিতে এ ব্যয় আরো বাড়তে পারে।


পরিকল্পনা-০৫:

দূর্যোগ মোকাবেলা প্রকল্প। এই প্রকল্পটি শুধু মাত্র যে কোন দূর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবেলা করবে। এই প্রকল্পের জন্য (৫০০,০০০০০/-) পাচঁকোটি টাকা স্থায়ী ফান্ডে বাজেট থাকবে সবসময়। দূর্যোগ মোকাবেলার সময় এই বাজেট প্রয়োজনে অনেক বাড়বে। ইনশা আল্লাহ!

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)